
ঈশ্বরের ভাষা
- 02 August, 2020
- 2 Comment(s)
- 172 view(s)
- লেখক: মাসুদ রানা
ছেলেবেলায় যেদিন আমাকে বলা হলো আরবি শিখতে হবে, কারণ মৃত্যুর পর আল্লাহ্র সাথে কথা বলতে হবে আরবিতে, তখন আমার প্রশ্ন উঠলো মনে : আল্লাহ্ কি বাংলা বুঝেন না?
অবুঝ শিশু ছিলাম বলে আমি মনে-মনে খুব চাইতাম একজন বাঙালী আল্লাহ্, যার সাথে বাংলায় কথা বলা যাবে।
কিন্তু যখন আমাকে বলা আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয়, তখন আমি প্রার্থনা করলাম : হে আল্লাহ্ তুমি বাংলা শিখে নাও; আমার মাতৃভাষাকে তুমি অসম্মান করলে আমি তোমাকে সম্মান করবো কীভাবে?
আসলে, যে ধর্মপ্রচারক যে ভাষা ও সংস্কৃতিতে জন্মগ্রহণ করেন, তিনি সে ভাষা ও সংস্কৃতিকেই স্ট্যাণ্ডার্ড মনে করে ধর্মকথা প্রচার করেন। এটিই তাঁর জন্যে স্বাভাবিক।
বহু পরে আমি জেনে খুশী হলাম যে, বাংলায় প্রচারিত একটি ধর্ম আছে, যার বাণীসমূহ বাংলায়। আর, সে-কারণে দূর প্রাচ্য থেকেও অনেকে বাংলায় আসে বাংলা ভাষা শিখে সেই বাণীর মর্ম বুঝতে এবং বাংলায় গান গাইতে। সে ধর্মের নাম হচ্ছে বাউল ধর্ম।
লণ্ডনে বাঙালী বংশোদ্ভুত ‘রঙ্গন’ নামের এক শিক্ষিত, শিল্পিত ও সু্দর্শন যবুকের মুখে আমি একদিন শুনলাম তাঁর মা-বাবা ধর্মে মুসলিম হলেও তিনি ধর্মে বাউল। তাঁর শান্ত-সৌম্য মুখমণ্ডল ছিলো আত্মবিশ্বাস ও আত্মতৃপ্তির আলোতে উদ্ভাসিত।
আমি তাঁকে জিজ্ঞেস করিনি তাঁর ঈশ্বর বাংলা জানেন কি-না। কারণ, আমি বিশ্বাস করেছিলাম, তাঁর কোনো ঈশ্বর থেকে থাকলে, তিনি বাংলাভাষীই হবেন।
১২/০৬/২০২০
লণ্ডন, ইংল্যাণ্ড